ক্রেতারা বিপাকে!

টেকনাফে ১ মাসে ২২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির পরেও দামের উর্ধ্বগতি


গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল • 
টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বন্দর থেকে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার টন পেঁয়াজ সারা দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। তবুও কমছেনা পেঁয়াজের মুল্য।

তথ্য সূত্রে দেখা যায়, ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ আমদানি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে সারাদেশে পেঁয়াজের মুল্য দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। এতে সাধারন ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনার জন্য টেকনাফ স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বৃদ্ধি করা হয়। সেই সুত্র ধরে গত এক মাসে মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমান পেঁয়াজ আমদানি করে ব্যবসায়ীরা। অথচ পেঁয়াজের বাজারে এখনো দামের উর্ধ্বগতি।

অভিযোগ রয়েছে, অসাধু অর্থলোভী ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করার আশায় বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, গত একমাসে ২১ হাজার ৭শ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। পাশাপাশি এক হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ খালাস করার অপেক্ষায় রয়েছে।

মিয়ানমার থেকে আরো কয়েক’শ মেট্রিকটন পেঁয়াজভর্তি একাধিক ট্রলার স্থলবন্দরের পথে রওনা দিয়েছে বলে জানায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।ব্যবসায়ীরা জানায়, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ গুলো স্থানীয় বাজারে চাহিদা মেটানোর পর নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। সেখান থেকে একাধিক হাত বদল হয়ে পেঁয়াজ সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অভিযোগ রয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ গুদামজাতকরণ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার মাধ্যমে পেঁয়াজের বাজার অস্তিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমারের রপ্তানিকারকরা টনপ্রতি গড় ৭০/৭৫ হাজার টাকায় টেকনাফ স্থলবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছেন। আনুষাঙ্গিক খরচ যোগ করে মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ টেকনাফ বন্দর কার্যক্রম শেষ করে কেজি প্রতি গড় দাম দাঁড়ায় ৯০ থেকে ৯৫ টাকা মাত্র।

তবে টেকনাফের স্থানীয় বাজারেই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম হাকাচ্ছে ১শ টাকা। টেকনাফ পাইকারী বাজারের লিটন সওদাগর, নুরু সওদাগর সহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তারা বন্দর থেকে আমদানিকারকদের কাছ থেকে কেজি ৯৫ টাকা দামে পেঁয়াজ ক্রয় করেছেন। টেকনাফ বাজারে এনে ১০ টাকা লাভে নিজেরা বিক্রি করছেন ১১০ টাকায়।

এদিকে সাধারন ক্রেতাদের অভিযোগ, মিয়ানমার থেকে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি হলেও কোন অদৃশ্য কারণে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছেনা তা আমাদের অজানা। মিয়ানমার থেকে যে পরিমান পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে তাতে পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকা পেরোনোর কথা নয়। অথচ সে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়।

টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মোঃ আবছার উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। সামনে পেঁয়াজ আমদানি আরো বৃদ্ধি পাবে।